বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
আকতার ফারুক শাহিন॥ করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন শেষে ঘরে না ফিরে পৃথক আইসোলেশন সেন্টারে যাবেন চিকিৎসক নার্সসহ সেবা সংশ্লিষ্টরা। করোনা প্রতিরোধে নেয়া ব্যবস্থার মধ্যে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশালে কারিতাস নামে একটি বেসরকারি সংস্থার ১৫টি কক্ষ প্রাথমিক পর্যায়ে পাওয়া গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। জেলা প্রশাসনের কাছে আরও আইসোলেশন সেন্টারের জন্য বেশ কয়েকটি ভবন চাওয়া হলেও শুক্রবার পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।
করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে একের পর এক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক নার্সসহ সেবা সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে ১ চিকিৎসক এবং ৩ নার্র্সসহ মোট ৭ জনের শরীরে পাওয়া গেছে করোনার উপস্থিতি। লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড। হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসক-নার্সসহ চিকিৎসাসেবায় সংশ্লিষ্ট ৩১ জনকে। সব মিলিয়ে যারা করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন তারাই এখন ঝুঁকির মুখে। জরুরি ভিত্তিতে এদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া না হলে বরিশালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, আরও ৩-৪ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হতে পারে। আমরা তাদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। স্থানাভাবে নগরীর সাগরদী এলাকায় কারিতাসের প্রতি কক্ষে ২ জন করে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের রাখা হচ্ছে।
যেখানে আইসোলেশন মানে একটি কক্ষে একজনই থাকা যাবে, সেখানে ২ জন করে থাকা কতটা নিরাপদ জানতে চাইলে বাকির হোসেন বলেন, বরিশাল নগরীতে বিশেষ করে হাসপাতালের আশপাশের আবাসিক হোটেল এবং বিভিন্ন সরকারি গেস্টহাউসগুলো যাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাসেবা সংশ্লিষ্টদের ব্যবহারের জন্য দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আমরা জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি। তিনি বরিশাল জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্য মহাপরিচালককে। এসব স্থাপনা পেলে আমরা আমাদের চিকিৎসক নার্স এবং সেবা সংশ্লিষ্টদের আইসোলেশনে থাকা নিশ্চিত করতে পারব। বর্তমানে টানা ৭ দিন ডিউটি করার পর ডাক্তার-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠাচ্ছি।
এ বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়ার রহমান বলেন, হাসপাতালের পরিচালকের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পরপরই আবাসিক হোটেলগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে আপনারা তো বোঝেন যে কেবল আবাসন নয়, সেই সঙ্গে তাদের খাবারসহ আরও অনেক কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া হোটেলগুলোর প্রস্তুতিরও ব্যাপার রয়েছে। আমরা রোববার এসব নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। বরিশালের স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, চিকিৎসক-নার্স এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষা ও আইসোলেশন নিশ্চিতে সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জেলা উপজেলা পর্যায়ে আমরা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করছি।
Leave a Reply